ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায় | ঘরোয়া পদ্ধতি
আমাদের দেশের মেয়েদের অনুযায়ী ছেলেদের সৌন্দর্যের হার খুবই কম। মেয়েরা প্রতিদিন রুপচর্চা নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। কে কার থেকে সুন্দর হবে তা নিয়ে প্রতিদিন প্রতিযোগিতা চলে মেয়েদের মধ্যে। কিন্তু ছেলেরা রুপচর্চার কোনো সময় পায় না। সারাদিন বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যাস্ত থাকে টাকা উপার্জনের জন্য। ফলে তাদের মুখের তক নষ্ট হয়ে যায়। মুখে বর্ণ উটতে শুরু করে। তাই আজ ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায় নিয়ে লিখলাম।
অনেকে মনে করে রূপচর্চা শুধুই মেয়েদের জন্যই। কিন্তু এই ধারণাটা কখনই ঠিক নয়। কারণ যেহেতু ছেলেদের কাজের প্রয়োজনে বাইরে বেশি যেতে হয়, সেহেতু তাদের ত্বক আরো দ্রুত কালচে হয় যায়। মুখের তক নষ্ট হয়ে যায়। অনেকে দেখা যায় প্রচন্ড রোদে কাজ করে থাকে। এতে তাদের চেহারা মলিন হয়ে যায়।
এক নজরে সম্পূর্ণ পোস্ট
ছেলেদের ব্রণ দূর করার উপায়
তাছাড়া সারাদিনের কাজ, ধুলাবালি, রাস্তার কালো ধোয়া, রোদের তাপ ছেলেদের মুখের তক নষ্ট করে দেয়। মুখে কালো কালো ছোপ আর ধুলাবালিতে চেহারার উজ্জ্বলতা কোথায় যেনো হারিয়ে গেছে।
সারাদিন কাজ শেষে, শুধু জল বা সাবান দিয়ে মুখ ধুলেই কি সব ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়? অনেকের ধারণা কিছুটা এমনই। কারণ অনেকে মনে করে ছেলেদের ত্বকের যত্ন নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এই ধারনাটা ভূল। আমার মতে মেয়েদের মত, ছেলেরা ও যদি একটু রুপচর্চা করে থাকে। তাহলে অবশ্যই ছেলেদের মুখের ব্রণ এর দাগ দূর হয়ে যাবে।
ছেলেদের মুখের বর্ণ দূর করার উপায়
আমাদের বেশির ভাগ দেখা যায়, ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যায়। কিন্তু ছেলেরা অনেক দেরি করে ঘুমায়। রাতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়। রাতে কম্পিউটার, মোবাইল টিপে কাজ করে। এতে শরীর জন্য ও ক্ষতি কর, এমনকি মুখের তক ও নষ্ট হয়ে যায়।
এর ফলে মুখে ব্রণ উঠে। ছোট ছোট মুখে একরকম দাগ বসে যায়। এতে দিন দিন মুখটা কালো হয়ে যায়। প্রিয় পাঠক চিন্তার কোনো কারণ নেই। আজ আমি ছেলেদের মুখের ব্রণের দাগ দূর করার উপায় নিয়ে হাজির হলাম। কিন্তু বেশি রাত যাগা ভালো না। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাওয়া ভালো। তাহলে জেনে নিন ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায়।
মুখে ব্রণ কেন হয়?
ছেলে হোক মেয়ে হোক বিভিন্ন কারণে ছেলে মেয়েদের মুখে ব্র হয়ে থাকে। তবে বেশির ভাগ ছেলেদের মুখে ব্রণ হয়ে থাকে। তাহলে জেনে নিন, ব্রণ কেন হয়।
১. হরমোনের পরিবর্তন বা কিছু স্বাস্থ্যবিধির কারণে ব্রণ হতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হলো হরমোনের পরিবর্তন।
২. ছেলেমেয়েদের বয়স সন্ধি অনুযায়ী, অথ্যাৎ প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েদের একটা সময় মুখে ব্রণ হয়ে থাকে।
৩. ত্বকে ধুলো ময়লা জমে থাকার কারনে ও ব্রণ হয়ে থাকে।
৪. বংশগত কারণ ও হয় ব্রণ হয় ।
৫. রাতে দেরি করে ঘুমালে শরীরের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনি মুখে ব্রণ ও উঠতে থাকে।
৬. তাছাড়াও ত্বকে ভিটামিনের অভাবে ও হতে পারে।
৭. কোষ্ঠকাঠিন্য কারণে এই ব্রণ হতে পারে বলে মনে করা হয়, বিশেষজ্ঞরা।
তাছাড়া আরো ব্যাক্তিগত বিভিন্ন কারণে ও ছেলেদের মুখে ব্রণ উঠে থাকে। তাহলে জেনে নিন, ছেলেদের মুখের ব্রণ এর দাগ দূর করার নিয়ম।
আরো পড়ুনঃ
মেয়েদের ত্বক ফর্সা এবং মুখ সুন্দর করার উপায়
মেছতা দূর করার উপায়
ব্রণ দূর করার প্রাকৃতিক উপাদান
ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার কিছু প্রাকৃতিক উপাদান নিম্নে বর্ননা করলাম। তাহলে আর দেরি না করে জেনে নিন ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার নিয়ম। নিম্নে কিছু প্রাকৃতিক উপায় লিখলাম ব্রণ দূর করার।
পানি ব্যবহার করে ব্রণ দূর করার নিয়ম
আমরা সবাই জানি পানির উপকারীতার গুরুত্ব অপরিসীম। পানি ব্যাবহার করে ত্বকের ব্রণ দুর সম্ভব। প্রতিদিন ৮-১২ গ্লাস পানি অবশ্যই পান করবেন । যা মানুষের শরীরের জন্য যেমনি ভালো ঠিক তেমনি মুখের ব্রণকে কমিয়ে আনতে খুব সাহায্য করে।
পানি দিয়ে মুখ বার বার ধোয়া ও মুখের ব্রণের দাগ দূর হয়। আর আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন। তাহলে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার জন্য অযু করতে হয়। অযু করার জন্য মুখে অবশ্যই পানি দিতে হয়। তাহলে আপনার নামাজ পড়া ও হলো, মুখের ব্রণ এর দাগ ও দূর হলো।
মুখ পরিষ্কার রাখা
কাজ বা বাড়ীর বাইরে থেকে আসার পর, সব সময় মুখ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। তা ছাড়া হালকা গরম পানির স্টিম নিতেও চাইলে নিতে পারেন। এর ফলে ত্বকের ভিতর জমে থাকা ধুলাবালি পরিষ্কার হয়ে যাবে। এমনকি বাহিরে বা রাস্তা ঘাঠে, কর্মস্থলে যে খানে থাকেন, চেষ্টা করবেন মুখ পরিষ্কার রাখতে।
ঘুম
রাতে ঘুম ভালো হলে, ধীরে ধীরে ব্রণ দূর হয়ে যায়। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে হবে, আবার ভোর তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হবে। রাতে ৭- ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। অনেকে রাত জেগে থাকে, দিনে ঘুমায়। তাহলে ব্রণ মুখে আরো বেশি করে উটবে। মনে রাখবেন রাতের ঘুম, আর দিনের ঘুম অনেক পার্থক্য আছে। তাই রাতের ঘুম রাতে যাওয়াই ভালো।
নামাজ পড়ে ব্রণের দাগ দূর করার উপায়
আপনি প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুন। আর আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন। যাতে আল্লাহ আপনার মুখের ব্রণ দূর করে দেয়। এমনকি মুখের কালো দাগ দূর করে দেয়। মনে রাখবিন প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার জন্য অযু করতে হয়। তার মানে অযুঠিক মতো করতে হলে,মুৃখে পানি দিতে হবে।
হয়তো তুমি নামাজ পড়ার জন্য, আল্লাহ তোমার মুখের সকল দাগ দূর করে দিতে পারে। উপরে নিছে, তুমি যে কোনো টিপস অনুযায়ী ব্যবহার করোনা কিনা। তবে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে ও দোয়া করতে হবে। মুখ সুন্দর রাখার মালিক আল্লাহ। আল্লাহর উপর ও ভরষা করতে হবে।
দুশ্চিন্তা না করা/ কোনো কিছু নিয়ে চিন্তিত না হওয়া
মুখে ব্রণ উঠবেই, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু ছেলে আছে মুখে ব্রণ উঠলে দুশ্চিন্তা করা শুরু করে। এটা করা যাবে না। আবার কেউ কেউ প্রেমিকার সাথে রাগ করে, অনেক টেনশন আর চিন্তিত হয়ে থাকে। রাতে ঘুমায় না, মোবাইল টিপে। এটা করা যাবে না, এটা একটা বদ অভ্যাস। মোট কথা আপনি যত বেশি দুশ্চিন্তা করবেন। ততই মুখে ব্রণ উঠতে থাকবে।
ব্রণে হাত না দেওয়া/ নখ দিয়ে ব্রণ না খোটা
আমাদের মধ্যে প্রায় অনেকেই আছে, যারা নখ দিয়ে ব্রণ খোটার অভ্যাস আছে। এতে করে ব্রণের অবস্থা ভালো হওয়া থেকে বরং আরও খারাপ হয়ে যায়। এতে করে দেখা যায় ব্রণ ফুলে যায় এবং লাল হয়ে যায়। এমন ও দেখা যায় অনেক সময় তা ফেটে গিয়ে মুখে কালো দাগের সৃষ্টি করে।
তাই ব্রণ না যাওয়া আগ পর্যন্ত ব্রণে হাত দেওয়া বা খোটা যাবে না। যদি ব্রণটি মুখ সাদা হয়ে যায়। তাহলে হালকা করে ধরে ব্রণের মুখের সাদা আশটা বের করে ফেলুন। বেশি খোটা যাবে না। নখ দিয়ে খোটা যাবে না। এই বদ অভ্যাস ছেড়ে দিন, ধীরে ধীরে ব্রণ উঠা বন্ধ হয়ে যাবে।
ছেলেদের মুখের ব্রণের দাগ দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি
ঘরোয়া কিছু উপায় দিয়ে ছেলেদের ব্রণের দাগ দূর করা যায়। আসলে ছেলেদের মুখের ব্রণ দূর করার উপায় , সেইটা ছেলে হোক কিংবা মেয়ে হোক। কেউ যদি বলে, তোমার মুখে ব্রণ কেনো, এটা শুনার পর মন খারাপ হয়ে যায়। সাধারণত তৈলাক্ত ত্বক অথবা ত্বকের ভালো ভাবে অযত্ন নেয়ার কারনেই অনেকের মুখে ব্রণ দেখা যায়।
মুখের ব্রণ থেকে বাচার জন্য, সব সময় মুখ পরিষ্কার রাখতে হবে। ঘরোয়া ভাবে নিজেই চেষ্টা করুন, কিভাবে ব্রণের দাগ মুছা যায়। অন্যর কথা শুনে উত্তেজিত হওয়া যাবে না। তোমাকে অনেকে অনেক ধরনের কথা বলবেই, এটা স্বাভাবিক। তবে মুখের ব্রণ দূর করার জন্য নিজেই ঠান্ডা মাথায় ছিন্তা করুন, কি করলে দূর হবে।
লেবু দিয়ে ছেলেদের মুখের ব্রণের দাগ দূর করার নিয়ম
প্রথমে একটা লেবু কেটে খোসাসহ মুখে ভালভাবে ঘষে নিন। লেবুর সাইট্রিক এসিড আপনার ত্বকের অতিরিক্ত তেল, পিগমেন্টেশন, রোদে পোড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এর ভিটামিন সি মুখের কালো দাগ দূর করে ত্বককে আরো ফর্সা করতে সাহায্য করে। ফলে আপনার মুখের ব্রণের দাগ মুছে যাবে ধীরে ধীরে।
শশা দিয়ে ব্রণের কালো দাগ দূর করার নিয়ম
প্রকৃত ভাবে ছেলেদের ত্বককে উজ্জ্বল করতে, শশা খুব উপকারী উপাদান হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন বাড়ি ফিরে মুখ ধোয়ার আগে শশার টুকরো দিয়ে ১০ থেকে ২০ মিনিট মুখ ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে নিন। প্রতিদিন ব্যবহারে ত্বক অনেক পরিষ্কার হয়। এর ফলে ধীরে ধীরে আপনার মুখের ব্রণের কালো দাগ মুছে যাবে।
ডিমের সাদা অংশ দিয়ে ব্রণের দাগ দূর করার উপায়
ডিমের সাদা অংশ যেমন আমাদের ত্বকের খসখসে ভাব দূর করে তেমনি সাহায্য করে ব্রনের কালো দাগ দূর করতে। তাই রাতে ঘুমানোর আগে , ডিমের সাদা অংশ যে খানে ব্রণ হয়েছে সেই জায়গায় ম্যাসেজ করে রাখবেন। তার সাথে যদি লেবুর রস যোগ করেন তাহলে সবচেয়ে ভালো হয়। ১ ঘন্টা রাখার পর ধুয়ে তা ভালো ভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
এই রকম আরো অনেক ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে ব্রণ দূর করার জন্য। মুখে ব্রণ দেখে হতাশ হওয়া যাবে না। আস্তে আস্তে নিজেই ঘরোয়া পদ্ধতি দিয়ে ব্রণ দূর করুন। ছেলেদের ব্রণ দূর করার কিছু ক্রিম রয়েছে। এই গুলো ব্যবহার করে ব্রণ দূর হতে ও পারে, না ও হতে পারে।
সর্বশেষ কথা
আপনি প্রতিদিন একটু একটু করে মুখের যত্ন নিন। তাহলে ধীরে ধীরে আপনার মুখের ব্রণ দূর হয়ে যাবে। এমনকি কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুযায়ী চেষ্টা করুন। আশা করি মুখের কালো দূর হয়ে যাবে।
কিন্তু মনে রাখবেন কেমিক্যাল প্রোডাক্ট থেকে দূরে থাকাই ভালো। কারন কেমিক্যাল প্রোডাক্টে ত্বককে নষ্ট করে দিতে পারে। আবার স্কিনের অনেক ডিজেস টাইপের প্রবলেম ও দেখা দিতে পারে। অনেকে সুন্দরের জন্য কেমিক্যাল ব্যবহার করে,কিন্তু সুন্দর হয় না। মুখের কালো দাগ যায় না। তা নিয়ে খুবই চিন্তিত থাকে। মুখে ব্রণ উটবেই এটা স্বাভাবিক। উপরের টিপস অনুযায়ী ব্যবহার করুন, ইনশাআল্লাহ আপনার মুখের ব্রণ আর কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।