ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল | খাওয়ার আগে বা পরে |
প্রিয় পাঠক সবাইকে banglablogger.info ওয়েবসাইটের পক্ষ থেকে স্বাগতম। আশা করি সবাই ভালো আছো, আমি ও ভালো আছি। আজ তোমাদের জন্য খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে আসলাম। আর সেটি হলো ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল । বর্তমানে প্রায় অধিকাংশ পরিবারে কেউ না কেউ ডায়াবেটিস আক্রান্ত ভুগছে।
প্রতিটি মানুষ বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিনি বিভিন্ন ধরনের খাওয়া খেয়ে থাকে। বেঁচে থাকার জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন পেশার কাজ করে থাকে। এতে শরীরের উপর বিভিন্ন প্রভাব পড়ে থাকে। ইচ্ছায় অনিচ্ছায় মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে। তার মধ্যে ডায়বেটিস রোগটি খুবই কমন। অধিকাংশ মানুষের শরীরের এই রোগ হয়ে থাকে।
এক নজরে সম্পূর্ণ পোস্ট
ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
এখন প্রায় দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে একজন ডায়বেটিস রোগী আছেই বটে। অনেকেই ডায়বেটিস নিয়ে চিন্তিত থাকে। আবার অনেকে জানে না, ডায়াবেটিস হলে কি খেতে হবে, কি করতে হবে।
এমনকি ডায়াবেটিস পয়েন্ট কত হলে নরমাল, আর কত পয়েন্ট হলে বেশি। আজ আমার আর্টিকেলে ডায়বেটিস কত হলে নরমাল এটা নিয়ে বিস্তারিত লিখবো।
ডায়বেটিস কত হলে নরমাল
সাধারণত বিভিন্ন অবস্থায় শরীরে ডায়াবেটিসের প্রভাব বিভিন্নরুপে অসস্থি দিতে পারে। সেজন্য আপনার জানা থাকা উচিত, খালি পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল। কিংবা খাওয়ার পর অথবা ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল ।
ডায়াবেটিস কি? ডায়বেটিস কেনো হয়? ডায়াবেটিস কমানোর সহজ উপায় কি কি? এই বিষয় গুলো নিয়ে নিম্নে আলোচনা করবো। তাহলে জেনে নিন ডায়বেটিস কত হলে নরমাল।
আরো পড়ুনঃ
রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করার পদ্ধতি | এবং প্রয়োজনীয়তা
মধু খাওয়ার উপকারীতা | মধু খাওয়ার নিয়ম
মেছতা দূর করার উপায় | ঘরোয়া পদ্ধতি
ডায়াবেটিস টেস্ট কত ধরণের ?
চার ধরনের ডায়াবেটিস টেস্ট হয়।
নিন্মে চার ধরনের ডায়াবেটিস টেস্টের নাম দেওয়া হলো।
1. FBS : fasting blood sugar :
৮-১০ ঘন্টা খালি পেটে এই টেস্টটি করতে হয়। সকালের খালি পেট; এই টেস্টের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত সময়।
2. 2hrs ABF: 2hrs After breakfast :
নাস্তা খাওয়ার ২ ঘন্টা পর এই টেস্ট করতে হয়।
3. 2hrs 50/75g Glucose:
এই টেস্টটি নাস্তা না খেয়ে গ্লুকোজ খেয়ে ২ ঘন্টা পর করতে হয়। অনেকে ১ ঘন্টা পরও একবার রক্ত দিয়ে থাকেন। আবার ২ ঘন্টা পরও দেন। মোট ৩ বার দিয়ে থাকেন।
4. RBS: Random Blood Sugar:
ডায়াবেটিস এর এই টেস্ট টি নাস্তা খাওয়ার ২ ঘন্টা পর করতে হয়।
ডায়াবেটিস কি?
এই ডায়াবেটিস হলো হরমোন সংশ্লিষ্ট ব্যধি বা রোগ। এ রোগটিকে অনেকেই “বহুমূত্র” রোগ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। মানব দেহের শরীরের রক্তে যখন শর্করা এবং চিনি বা সুগারের উপাদানের তারতম্য দেখা যায়। তখনই সাধারণত ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ ধারণা করা হয়।
পরিবারের কারো ডায়াবেটিস হয়ে থাকলে, অনেকে মনে করে এটি একটি বংশ-পরম্পরা রোগ। আসলে ধারণাটা ভুল, কিছু কিছু রোগ ব্যাধি আল্লাহ দিয়ে থাকে, আবার আল্লাহ ভালো করে থাকে। কিন্তু কিছু কিছু রোগ হয়ে থাকে মানুষের কর্মকান্ডের উপর বিবেচনা করে।
খাওয়ার আগে বা ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল?
আমাদের দেশে অনেকে ডায়াবেটিসের মাত্রা পরীক্ষা করাটা ঝামেলার মনে হয়। কারণ, ডায়াবেটিস পরীক্ষা করার জন্য সকালে রক্তের নমুনা দিতে হলে।
নিম্নত আট ঘন্টা না খেয়ে থাকতে হয়। এবং পরপর দুইবার রক্ত দিতে হয়। সব কিছু মিলিয়ে অনেকে চিন্তিত বা ঝামেলা মনে করে থাকে।
তাই ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানা খুবই প্রয়োজন। এতে আপনার পরিবারের কেউ বা নিকটতম কেউ আপনার দ্বারা উপকৃত হবে।
আমেরিকান ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন সংস্থা’র তথ্যমতে- সাধারণত এইচবিএ১সি’র মান 5.7 ’এর নিচে থাকলে, আপনার ডায়াবেটিকস নরমাল হিসেবে ধরা বিবেচনা করতে পারেন।
এমনকি এইচবিএ১সি’র মান 6.5 ’এর বেশি হলেঃ ডায়াবেটিস আছে বলে বিবেচিত হবে।
খাওয়ার পর ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
নরমালি ডায়াবেটিসবিহীন একজন ব্যক্তির রিডিং সাধারণত খালি পেটে ১০০ এর নিচে এবং খাওয়ার দুই ঘন্টা পরে ১৪০ এর নিচে থাকে।
আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রাথমিক লক্ষ্য হল খালি পেটে ৭০ থেকে ১৩০ এর মধ্যে পড়া এবং খাবার শুরু করার দুই ঘন্টা পরে ১৮০ এর কম।
ডায়াবেটিস কত পয়েন্ট হলে নরমাল
বর্তমানে অনেকে ডিজিটাল ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র দিয়ে ডায়বেটিস মাপে থাকে। কিন্তু জানে না ডায়বেটিস কত পয়েন্ট হলে নরমাল। ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল, নিচে দেওয়া হলো জেনে নিন।
সাধারণত 140 mg/dL (7.8 mmol/L) এর চেয়ে কম রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক হিসেবে বিবেচ্য। দুই ঘন্টা পর 200 mg/dL (11.1 mmol/L) এর বেশি রিডিং ডায়াবেটিস নির্দেশ করে। 140 এবং 199 mg/dL (7.8 mmol/L এবং 11.0 mmol/L) এর মধ্যে একটি রিডিং – ডায়াবেটিকস এর পূর্ব লক্ষণ নির্দেশ করে।
বাচ্চাদের ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
স্বাভাবিক ভাবে অনেকে জানে না, ডায়াবেটিস একটি কমন রোগ ব্যধি। এই রোগটি ছোট বড় সবাইর হয়ে থাকে। শিশুদেরও ডায়াবেটিকস ব্যধী হয়। এদের রোগের ধরণ ভিন্ন।
বাচ্চাদের সাধারণত টাইপ-১ ডায়াবেটিকস হয়। ৫ – ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য, স্বাভাবিক রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা 70 থেকে 150mg/dL। উপবাসের রক্তে শর্করা স্বাভাবিক চিনির মাত্রার নিম্ন প্রান্তের কাছাকাছি হতে হবে। খাবারের পরে এবং শোবার আগে রক্তে শর্করা উপরের প্রান্তের কাছাকাছি হওয়া উচিত। রাতের বেলায় 120mg/dL এর নিচে গ্লুকোজের মাত্রা চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন।
ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
বেচে থাকার জন্য আমরা প্রতিদিনি বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকি। সাধারণত খাবারের পরে ভরা পেটে দেহের রক্তে সুগার (চিনি উপাদান) রক্তের মাত্রা সামান্য বেড়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিকের কিছু নয়।
কিন্তু এই সুগারের মাত্রা যদি ৭.৮ পয়েন্ট ( mmol/l ) ‘এর থেকে বেশি পরিমাণে বেড়ে যায় তাহলে এটাকে প্রি-ডায়াবেটিস বা ডায়াবেটিকসের পূর্ব লক্ষণ বলা যায়। এমনকি ১১. ১১ পয়েন্টের চাইতে অধিক হলে, তখন ডায়াবেটিসের যথাযুক্ত মাত্রায় চলে যায়।
খালি পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
অনেকে জানে না ডায়বেটিস কত হলে নরমাল। নিচে দেওয়া হলো খালি পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল। তাহলে জেনে নিন ডায়বেটিস কত হলে নরমাল ।
খালি পেটে একজন ব্যক্তির ডায়াবেটিকস রিডিং সাধারণত ১০০ -এর নিচে হয়ে থাকে। এবং ডায়াবেটিকস রোগের প্রাথমিক লক্ষ্য হলো: খালি পেটে ৭০ থেকে ১৩০ রিডিং এর মধ্যে পড়া।
ডায়াবেটিস কত হলে বেশি
আমেরিকান ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, HBA1C এর মান 5.6 এর কম হলে স্বাভাবিক বলে মনে করা হয়।
কিন্তু যদি এটি 7.5 এর বেশি হয় তবে এটি ডায়াবেটিক হিসাবে বিবেচিত হয়। এই মান 5.6 এবং 7.5 এর মধ্যে হলে প্রি-ডায়াবেটিস বা প্রাক-ডায়াবেটিস বলা উচিত।
ডায়াবেটিস মাপার সঠিক সময়
দেশে অনেক ডায়াবেটিস রোগী জানে না, ডায়াবেটিস মাপার সঠিক সময়,কোন সময়? তাই নিচে ডায়বেটিস মাপার সঠিক লিখলাম।
ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞদের মতান্তরে, খাদ্যদ্রব্য গ্রহণের প্রায় দুই ঘন্টা (02 hours) পর, ডায়াবেটিস টেস্ট করানো বা মাপা উচিত। অনেকেই আছেন, যারা নিয়মিত ডায়াবেটিকস টেস্ট করাতে ভুলে যান।
এমনকি অবহেলা করে থাকেন, তাদের জন্য সতর্কতা মূলকভাবে বলছিঃ নিয়ম মেনে টেস্ট না করালে, আপনি হয়তবা সঠিকভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন না। সুতরাং, নিয়মিত টেস্ট করালেই ভালো। নিয়মিত সময় অনুযায়ী ডায়াবেটিস মেপে ঔষধ খাওয়া ভালো।
ডায়াবেটিস এর লক্ষণ কি?
যেসব লক্ষণ দেখলে ডায়াবেটিস রোগ হতে পারে। নিম্নে দেওয়া হলো।
- ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া ও পিপাসা লাগা
- দুর্বল লাগা’ ঘোর ঘোর ভাব আসা
- ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া
- সময়মতো খাওয়া-দাওয়া না হলে রক্তের শর্করা কমে হাইপো হওয়া
- মিষ্টি জাতীয় জিনিসের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া
- কোন কারণ ছাড়াই অনেক ওজন কমে যাওয়া
- শরীরে ক্ষত বা কাটাছেঁড়া হলেও দীর্ঘদিনেও সেটা না সারা
- চামড়ায় শুষ্ক, খসখসে ও চুলকানি ভাব
- বিরক্তি ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠা
- চোখে কম দেখতে শুরু করা
সর্বশেষ কথা
তাহলে আশা করি বুঝাতে পারছেন, ডায়াবেটিস কি এমনকি ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল। ডায়াবেটিস মাপার সঠিক সময়। মোট কথা যারা ডায়াবেটিস কমানোর চিন্তা ভাবনা করতেছেন, তারা নিয়মিত ডায়াবেটিস টেস্ট করে থাকবেন।
যদি আপনি অবহেলা করে ডায়াবেটিস না মাপেন, তাহলে আপনি ডায়াবেটিস রোগ থেকে সহজে মুক্তি পাবেন না। যাই হোক ডায়াবেটিস সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানার জন্য, ভালো একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।