হাতের লেখা সুন্দর করার নিয়ম [২০২২]
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। প্রিয় পাঠকগন আজ আমি আপনাদের জন্য। একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল লিখলাম। আর্টিকেলটি হলো হাতের লেখা সুন্দর করার নিয়ম। আমার আর্টিকেল অনুযায়ী আপনি কাজ করলে, আশা করি আপনার লেখা সুন্দর হয়ে যাবে। তাহলে জেনে নিন, হাতের লেখা সুন্দর করার নিয়ম কানুন।
কে না চায় হাতের লেখা সুন্দর করে লিখার জন্য। বাংলাদেশ সহ সকল দেশের লোকজন হাতের লেখা সুন্দর করতে চায়। সুন্দর হাতের লেখার কদর সবার কাছেই আছে। কিন্তু লেখার সুন্দর করার জন্য, কিছু কৌশল বা নিয়ম রয়েছে। তা সবাই জানে না।
বিশেষ করে যাদের হাতের লেখা খুব একটা সুন্দর নয়। তারা অনেকে চেষ্টা করে লেখা সুন্দর করার জন্য, কিন্তু পারে না। তারা সারাটা জীবনই আফসোস করেন, নিজের হাতের লেখা নিয়ে। কিছু নিয়ম আর কৌশল অবলম্বন করলেই লেখা সুন্দর করা যায়।
এক নজরে সম্পূর্ণ পোস্ট
হাতের লেখা সুন্দর করার নিয়ম
কিন্তু কয় জনে চেষ্টা করে? সবাই অন্যদের সুন্দর হাতের লেখা দেখে যায়। আর হিংসায় জলে পুড়ে যায়।আর মনে মনে ভাবে একদিন আমিও দেখিয়ে দেবো। এটা চিন্তা করে যায়। আর হাতের লেখা সুন্দর করতেই পারে না।
অনেক ছাত্র ছাত্রী প্রতিজ্ঞা করে, আগামীকাল থেকে সুন্দর করে লিখবে। কিন্তু কত আগামীকাল চলে যায়, লেখা সুন্দর হয় না। আর যারা সত্যিই চেষ্টা করেছেন, নিয়ম কানুন মেনে চলেছেন। তারাই একাদিন সফল সুন্দর হাতের লেখা লিখতে পারছে।
অনেক ছাত্র ছাত্রী প্রতিদিন ক্লাসে, লেখা সুন্দর না হওয়াতে শাস্তি পাচ্ছে।
আবার শিক্ষক গন লেখার সুন্দর করার জন্য, অনেক বুঝায়। কিন্ত কাউ সুন্দর করার চেষ্টা করে, আবার কেউ করে না। যারা সুন্দর করে লেখে না, স্যার তাকে বিভিন্ন ধরনের লজ্জা দেয়।
হাতের লেখা সুন্দর করার নিয়ম কানুন
আপনার বন্ধু বা কলিক এর লেখা সুন্দর দেখলে। আপনি ও নিজেকে প্রস্তুতি করেন লেখা সুন্দর করার জন্য। লেখা সুন্দর করার জন্য ইচ্ছে শক্তি থাকতে হবে। আপনি ইচ্ছে না করলে অন্য কেউ বা স্যার আপনাকে যতই বুঝাবে। আপনি সুন্দর করে লিখতে পারবেন না।
তাই আপনার দরকার ইচ্ছে শক্তি এবং সাধনা। সাধনা ছাড়া কেউ কোনো কিছু খুব তারাতাড়ি পায় না। আর যারা সাধনা ছাড়া পায়, তা মনে করবেন ক্ষনিকের জন্য কেবল।
আমি যখন ৮ম শ্রণিতে পড়তাম। তখন আমার হাতের লেখা ক্লাসের আরো ৮ – ১০ জনের মতোই ছিলো। যাদের লেখা সুন্দর স্যার তাদের প্রশংসা প্রতিদিন করেন। আর আমার মতো যাদের লেখা তেমন সুন্দর নাই, তাদের শাস্তি দিয়ে থাকে।
হাতের লেখা সুন্দর করার উপায়
তখন থেকে প্রতিজ্ঞা করলাম, লিখা সুন্দর করবো। ধরকার প্রয়োজনে পড়ার থেকে লেখায় সময় বেশি দিবো। এই চিন্তা করে লেখা সুন্দর করার চেষ্টা করতে থাকলাম। আমার লেখা ৬ মাসের মধ্যে মোটামুটি কিছু টা সুন্দর হয়েছে।
যতটুকু হয়েছে ততটুকু নিয়েই আমি হ্যাপি ছিলাম। কারন স্যার অন্যদের মতো আমার লেখার ও প্রশংসা করলেন। যাদের লেখা দেখে শিক্ষক বা অন্য কেউ প্রশংসা করে। শুধু তারাই বুঝে তাদের কাছে কতটা ভালো লাগে।
যাই হোক, এবার আসল কথায় আসি। কিভাবে লেখা সুন্দর করা যায়। ঐ রকম কিছু নিয়ম আর কৌশল নিম্ন বিস্তারিত লিখলাম। তাহলে আর দেরি নয় চলুন।
হাতের লেখা সুন্দর করতে হলে কি প্রয়োজন হবে?
১. হাতের লেখা সুন্দর করার প্রথমেই থাকতে হবে ইচ্ছে শক্তি। ধর্য আর সাধনা।
২. একটি কলম প্রয়োজন হবে। য কোনো কলম হলেই চলবে। কিন্তু মনে রাখবেন যে কলম আপনি খুব সুন্দর করে ধরতে পারবেন। এমনকি আঙুল দ্বারা সহজে চেপে ধরা যায়।
৩. কাগজ নিতে হবে। যে কোনো কাগজ হলে চলবে। তবে মারজিন করা কাগজ হলে ভালো।
৪. একটি স্কেল।
৫. সকল স্বরবর্ণ ও স্ব্যাঞ্জনবর্ণ সুন্দর হতে হবে। মনে রাখবেন বর্ণ সুন্দর হলে, লেখা দূরত্ব সুন্দর হবে।
৬. হাতের আঙুল দিয়ে কলম ধরার কৌশল।
৭. লেখার লাইন গুলো বরাবর হতে হবে।
৮. শিক্ষক বা যার লেখা সুন্দর তাকে অনুকরণ করতে হবে।
৯. লেখা সুন্দর করতে মনের ভিতর প্রতিযোগিতা ভাব থাকতে হবে।
১০. অন্যর সুন্দর লেখা দেখে হিংসা করা যাবে না। বরং তার সাথে প্রতিযোগিতা করার এবেলিটি করে নিতে হবে।
হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল
লেখা সুন্দর করার জন্য প্রথমে আপনার ইচ্ছে শক্তি থাকতে হবে। আর চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখবেন কবি বলেছেন একবার না ফারিলে দেখো শতবার। আপনি একদিন চেষ্ট করলেন হলো না। আরো দুইদিন চেষ্টা করেন। তারপর ও না হলে আরো ১ সাপ্তাহ চেষ্টা করেন। তাও না হলে আরো ২ সাপ্তাহ বা মাস চেষ্টা করতে থাকুন।
এই চেষ্টার ফলে আপনার লেখা সুন্দর হয়ে যাবে। আপনার ক্লাসমিট বা পড়ার সাথি যার লেখা সুন্দর, তার সাথে বন্ধুত্ব করুন। তারপর সেই যে ভাবে লেখে, তার লেখা গুলো প্লো করুন। তার হাতের আঙুলের দিখে লক্ষ করুন। সেই কিভাবে কলম আঙুল দিয়ে চেপে ধরে লিখতেছে।
আপনি তাকে অনুকরণ করুন। আর না হয় তাকে বলুন, বন্ধু কলম কিভাবে ধরলে লেখা সুন্দর করা যায়। হয়তো সেই আপনাকে কলম ধরা শিখিয়ে দিবে। ঐ কলম ধরা অনুযায়ী আপনি লিখতে শুরু করুন।
আরো পড়ুনঃ
দরখাস্ত লেখার নিয়ম
ইংরেজিতে দরখাস্ত লিখার নিয়ম
বীজগণিত ও পাটিগণিতের সূত্রে সমূহ
লেখা সুন্দর করার জন্য কলম ধরার নিয়ম
লেখা সুন্দর করার জন্য আপনাকে কলম ধরতে হবে সুন্দর করে। ডান হাতের তিন আঙুল দিয়ে, কলমকে সুন্দর করে চেপে ধরতে হবে। মনে রাখবেন লেখার জন্য যে কোনো কলম হলে চলে। তবে কলমের ধরন মোটা বা খুব চিকন হলে হবে না।
কলম এমন হতে হবে, যাতে আপনি সুন্দর করে আঙুল চেপে ধরতে পারেন। অনেক কলম আছে দেখতে সুন্দর, তবে কলমের কালি ভালো না। সেই গুলো দিয়ে না লেখাই ভালো।
আপনার আশে পাশে যার লেখা সুন্দর। এমনকি আপনার ক্লাসে যার লেখা সুন্দর। তাকে কয়েকদিন প্লো করুন, সেই কিভাবে কলম ধরে লিখে। আস্তে আস্তে আপনি ও তার মতো করে কলম ধরে লিখতে থাকুন।
লেখা সুন্দর করার জন্য অঙ্গবিন্যাস ঠিক করা
আপনি লেখা সুন্দর করার জন্য, সোজা হয়ে বসুন। তারপর আপনার অনভ্যস্ত হাতটি, মানে ডানে হাতে লিখলে বাম হাতটি। কাগজ বা খাতাটিকে ধরে রাখার জন্য ব্যবহার করুন। বাম হাতটি কাগজ চেপে ধরলে, আপনার লেখা সুন্দর হওয়ার আরেকটা কাজ।
আর এ কাজ আপনাকে স্থির থাকতে সাহায্য করবে। এমনকি ডান হাতের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে সাহায্য করে। খাটে উপর বা বিচানায় বসে লিখলে, আপনি হয়তো অল্পতে বিরক্ত হতে পারেন। তবে এজন্য অবশ্যই চেয়ার-টেবিল ব্যবহার করা উত্তম।
লেখা সুন্দর করার জন্য বাহু এবং কবজির অবস্থান
দেখা গেলো বেশির ভাগ মানুষই, লেখার সময় শুধু আঙুল ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু হস্তাক্ষর বিদরা আঙুল দিয়ে কলম-পেন্সিল আঁকড়ে ধরেন। আর লেখার সময় নিজেদের বাহু, এবং কবজিকে সমান অবস্থানে রেখে লিখে থাকেন।
অনেকের দেখা যায়, লেখার সময় তার হাতের কব্জি বাকা হয়ে থাকে। তার কারনে, লেখা গুলো কেমন বড় ছোট হয়ে থাকে। এমনকি লেখা সুন্দর হয় না। তাই আপনি লেখার সময় হাতের কব্জি ঠিক রাখুন। আর যারা সুন্দর করে লিখতে পারে, তাদের প্লো করুন।
লেখা সুন্দর করার জন্য ধীরগতি অবলম্বন করা
বেশির ভাগ দেখা যায়, অনেক ছাত্র ছাত্রী খুব দ্রুত লেখে যায়। এর ফলে তাদের লেখা সুন্দর হয় না। অনেক ছাত্র ছাত্রী মনে করে যত দ্রুত লেখা যায় ততই ভালো। মনে রাখবেন, লেখা কোনো দৌড় প্রতিযোগিতা নয়।
আপনি কত দ্রুত তা শেষ করবেন এটাকে গুরুত্ব না দিয়ে। প্রতিটি অক্ষর কিভাবে সুন্দর করবেন সেটাকে গুরুত্ব দিন। আপনি একটু ধীরে লিখুন এবং অক্ষরকে তার শ্রেষ্ঠ চেহারায় রূপ দিন।
অক্ষরকে সুন্দরভাবে রূপ দিতে চেষ্টা করুন। বইতে কিভাবে অক্ষর গুলো সাজানো আছে, তা প্লো করুন। আপনি প্রথমে বড় বড় করে লেখার অভ্যাস করুন। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক লেখার স্টাইল ছোট আকারে হ্রাস করুন।
বাংলা লেখা সুন্দর করার নিয়ম
আপনি লিখার সময় স্থির হয়ে বসুন। চেয়ার টেবিল হলে ভালো হয়। লেখার সময় খেলায় বা অন্য কাজে মনোযোগ না দেওয়া ভালো। আপনার লেখার অক্ষর গুলো, স্পষ্ট করে লেখার চেষ্টা করুন।
লেখা সুন্দর করার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো। আপনার লেখার লাইন গুলো সোজা বরাবর হতে হবে। লাইন গুলো বরাবর হলে, আপনার লেখা সুন্দর হবে। যদি লেখার লাইন বরাবর না হয়। তাহলে আপনি সাদা কাগজের উপর কোনো কিছু দিয়া, বরাবর দাগ দিয়ে লিখতে শুরু করুন।
এই ভাবে দাগ দিয়ে লিখতে শুরু করুন। ১ বা ২ সাপ্তাহ ইনশাআল্লাহ আপনার লেখার লাইন বরাবর হয়ে যাবে। আস্তে আস্তে লিখুন হয়তো একটু সময় বেশি লাগবে। যখন আপনার লেখা সুন্দর হয়ে যাবে। তখন আপনি দ্রুত লিখতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ
ঘরে বসে অনলাইনে থানায় জিডি করার নিয়ম
হাতের লেখা সুন্দর করার উপকারিতা
আপনার লেখা সুন্দর করা খুবই প্রয়োজন এবং গুরুত্বপূর্ণ। সুন্দর হাতের লেখার জন্য, পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়া যায়। হাতের লেখা সুন্দরের উপর অনেক কিছু বিবেচনা করা যায়। লেখা সুন্দর হলে, আপনি লেখা সুন্দর এর প্রতিযোগিতা দিতে পারবেন।
আপনার লেখা সুন্দর হলে, সবাই আপনাকে যে কোনো বিষয় লিখার জন্য বলবে। আর আপনার লেখা দেখে প্রশংসা করবে। আপনার বন্ধুরা ভালোবাসার চিঠি আপনাকে দিয়ে লিখার জন্য, আপনার পিছনে পিছনে ঘুরবে।
লেখা সুন্দর দেখলে যে কেউ প্রশংসা করবে। লেখা সুন্দর না হলে যে কেউ গীবত করবে। এটাই বাস্তবতা এবং স্বাভাবিক। মনে করুন আপনার ঘরে মেহমান এসেছে। আপনাকে পড়াশোনার কথা জিজ্ঞেস করতেছে। হঠাৎ আপনার লেখার কাগজটা মেহমান দেখলো।
তখন মেহমান আপনার কাছা সুন্দর হাতের লেখা দেখে, অনেক অবাক হয়ে যাবে। আর সব জাগায় গিয়ে আপনার প্রশংসা করবে। যাদের লেখা খারাপ, তদেরকে শাসন করবে। আপনার উদাহরণ দিয়ে বুঝাবে আপনার লেখা কত সুন্দর। তাই লেখা সুন্দর করার প্রয়োজন এবং উপকারিতা অপরিসীম।
লেখা সুন্দর করার সর্বশেষ কথা
হাতের লেখা ভালো করার জন্য, অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে আপনি যত বেশি অনুশীলন করবেন। ততই বাংলা এবং ইংরেজি লেখার দক্ষতা বাড়বে, আর আপনার লেখা সুন্দর হবে। কাজেই পরিশ্রম আর চেষ্টা করলে সবই সম্ভব।
সুন্দর লিখেছেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ